ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২৪ - পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে
আজকের পোস্টটিতে আমরা ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২৪ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব।আপনারা যদি ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২৪ ও পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে এ সম্পর্কে জানতে চান তাহলে পোষ্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
সূচিপত্র:আজকের আর্টিকেলটি আপনি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়লে ই পাসপোর্ট মানে কি পাসপোর্ট কত প্রকার ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২৩, পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে 10 বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে ২০২৩ এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা জানতে পারবেন। তাহলে চলুন এখন মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।
ভূমিকা
একটি দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের সকলের একটি করে সেই দেশের জন্য বৈধ পাসপোর্ট থাকা জরুরী। আর এই পাসপোর্ট হল সেই দেশে বসবাসরত নাগরিকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল। একটি বৈধ পাসপোর্ট ব্যবহারের মাধ্যমে এক দেশের নাগরিক অন্য দেশে বৈধভাবে ভ্রমণ করতে পারে। পূর্বে দেশে ব্যবহৃত হতো এনালগ পাসপোর্ট।
এখন বর্তমানে দেশে ব্যবহৃত হবে ই - পাসপোর্ট। আজকে আমাদের আলোচনার মূল বিষয় হলো এ পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২৩ পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে। তার সাথে সাথে ই-পাসপোর্ট মানে কি, পাসপোর্ট কত প্রকার ও কি কি, পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে ২০২৩ এই সকল বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করবো। তাহলে চলুন আর বেশি দেরি না করে মূল আলোচনায় ফিরি।
ই-পাসপোর্ট মানে কি
আমরা প্রত্যেকেই এক দেশ থেকে অন্য দেশে ভ্রমণের জন্য এনালগ পাসপোর্ট ব্যবহার করে অভ্যস্ত। আজকে বুধবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকালে ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট বা ই পাসপোর্ট বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এই ই পাসপোর্ট ব্যবহার হওয়ার জন্য ২০১৯ সালের জুলাই মাসে একটি কর্মসূচি গঠন করা হয়।
উক্ত সময়ে কর্মসূচি গঠন করে কর্মসূচি শুরু হওয়া কথা থাকলেও বিভিন্ন বাধা বিপত্তিতে কয়েক দফা পিছিয়ে যায়। অবশেষে বুধবার অর্থাৎ ২০২০ সালের ২২শে জানুয়ারি ইলেক্ট্রনিক পাসপোর্ট এর আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি উদ্বোধন করা সম্ভব হয়। তাহলে চলুন এখন জেনে নেই ই-পাসপোর্ট মানে কি।
আরো পড়ূনঃ ঢাকা টু কক্সবাজার বাস ভাড়া ২০২৪
ই-পাসপোর্ট হল ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট এর একটি সংক্ষিপ্ত রূপ। এই পাসপোর্ট পদ্ধতিতে এই পাসপোর্টে একটি বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট তৈরি করা হয়। যাতে একটি এমব্যাডেড ইলেকট্রনিক মাইক্রোপ্রসেসর চিপ যুক্ত করার রয়েছে। এই মাইক্রোপ্রসেসর চিপ এর মধ্যে পাসপোর্টধারীর সকল পরিচয় পত্র বায়োমেট্রিক তথ্য হিসেবে জমা করা রয়েছে।
এর মাধ্যমে ওই ব্যাক্তিই যে এই পাসপোর্ট এর মালিক তার প্রমাণ করা যায়। পূর্বে এনালগ পদ্ধতিতে পাসপোর্ট তৈরি করার সময় পাসপোর্ট এর প্রধান অফিস থেকে একটি পাসপোর্ট বই সংগ্রহ করা হতো। এখন ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাসপোর্টের বইয়ের প্রথমে যে তথ্য সংবলিত দুটি পাতা থাকে, সেটি ই পাসপোর্টে থাকবে না।
সেখানে যুক্ত করা হবে পালিমানের তৈরি একটি ডিজিটাল কার্ড ও একটি ডিজিটাল অ্যান্টেনা। ই - পাসপোর্ট এ আকটি চিপ ব্যাবহার করা হবে সেখানে পাসপোর্টধারীর যেসকল তথ্য থাকে সেগুলো হলঃ
- তিন ধরণের ছবি
- তার ১০ টি আঙ্গুলের ছাপ এবং
- চোখের আইরিশ
যার ফলে অন্যান্য দেশের যেকোন কর্তৃপক্ষ খুব সহজেই পাসপোর্টধারীর/ ভ্রমণকারীর তথ্য জেনে নিতে পারবেন।
পাসপোর্ট কত প্রকার ও কি কি
নিজ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বাহিরের দেশে ভ্রমণ করার জন্য নিজ দেশের সরকার কর্তৃক যে অনুমতি পত্রটি গ্রহণ করা হয় সেটি হল পাসপোর্ট। এই পাসপোর্ট বাংলাদেশের সরকার প্রয়োজন অনুযায়ী প্রকারভেদে বিতরণ করে। এখন আমরা জানবো পাসপোর্ট কত প্রকার ও কি কি।
আরো পড়ূনঃ মালয়েশিয়া কনস্ট্রাকশন কাজের বেতন কত
বাংলাদেশ সরকার মূলত তিন ধরনের পাসপোর্ট ইস্যু করে থাকে। সেগুলো হলঃ
কূটনৈতিক পাসপোর্ট যা লাল মলাটযুক্তঃ এই পাসপোর্টটি শুধুমাত্র সেই সকল ব্যাক্তিগণকে প্রোদান করা হয়, যেসকল ব্যক্তিবর্গ বাংলাদেশের সরকারের পক্ষে কূটনৈতিক কাজ করে থাকেন। এই পাসপোর্টটির রং অন্যান্য পাসপোর্টের তুলনায় এর গায়ের মোলাট লাল হয়ে থাকে।
দাপ্তরিক পাসপোর্ট যা নীল মলাটযুক্তঃ এই পাসপোর্টটি শুধুমাত্র সেই সকল ব্যাক্তিগণকে প্রোদান করা হয়, যেসকল ব্যক্তিবর্গ বাংলাদেশের একজন সরকারি কর্মকর্তা। আপনি যদি বাংলাদেশের একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে থাকেন তাহলে আপনি আই পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
সাধারণ পাসপোর্ট বা নিয়মিত পাসপোর্ট যা সবুজ মলাটযুক্তঃ এই পাসপোর্টটি বাংলাদেশের সকল সাধারণ জনগণের জন্য উন্মুক্ত। এই পাসপোর্টটি বাংলাদেশের সকল সাধারণ জনগণ নিতে পারেন। আপনি যদি বাংলাদেশের একজন বৈধ নাগরিক হয়ে থাকেন তাহলে আপনি ও এই পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২৩
বর্তমানে বাংলাদেশ অনেক উন্নত হয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশের রুপ নিয়েছে। তাই এখন এনালগ পাসপোর্ট এর পরিবর্তে ডিজিটাল পাসপোর্ট অথবা ই পাসপোর্ট ব্যবহার করা হচ্ছে। কি পাসপোর্ট ব্যবহারের মাধ্যমে ভ্রমণকারীরা খুব সহজেই যাতায়াত করতে পারবে। ২০২১ সালের বুধবার সকালে আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ই পাসপোর্ট বিতরণের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
যাতে করে দেশের সকল লোকজনের যাতায়াতের সুবিধা হয়। এখন আমরা জানবো ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২৩ সম্পর্কে। ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২৩ সম্পর্কে নিম্নে ধারাবাহিকভাবে দেখানো হলো। যাতে করে আপনি খুব সহজেই ই পাসপোর্ট করে ফেলতে পারেন। তাহলে চলুন এখন দেখে নেই এই সম্পর্কে।
ধাপ - ১ঃ ই পাসপোর্ট এর জন্য প্রথমে আপনাকে আবেদন করতে হবে। যার জন্য এই ওয়েবসাইটটিতে ভিজিট করুন E-passport application । এই ওয়েবসাইটে আসার পরে আপনি নিচের মতো একটি পেজ দেখতে পাবেন।
এই পেজে আসার পরে আপনাকে ক্লিক করতে হবে Apply Online for e-Passport/Re-Issue এই অপশনে। তারপর আপনি নিচের মতো এমন একটি পেজ দেখতে পাবেন। সেখান থেকে আপনি আপনার জেলা ও থানার নাম নির্বাচন করে নিবেন।
এরপর আপনাকে আপনার ই-মেইল ভেরিফিকেশান করতে হবে। তার জন্য আপনি এখানে আপনার ই-মেইল এড্রেসটি বসান এবং রোবট ভেরিফিকেশনে টিক দেওয়ার পরে Continue বাটনে ক্লিক করতে হবে।
ধাপ - ২ঃ ইমেইল ভেরিফিকেশন
এখন আপনার ইমেইল ভেরিফিকেশন করার জন্য আপনার উক্ত ইমেইল এড্রেসে একটি ইমেইল ভেরিফিকেশন লিংক পাঠানো হবে। আপনাকে আপনার ইমেইল ভেরিফিকেশন করার জন্য আপনার ইমেইলটি ওপেন করে উনাদের পাঠানো সেই লিংকটিতে ক্লিক করে ইমেইল ভেরিফাই করে নিতে হবে।
ধাপ - ৩ঃ ব্যক্তিগত তথ্য পূরণ
আপনার ইমেইল ভেরিফাই করে নেওয়ার পরে, আপনি পুনরায় সেই ওয়েবসাইটে লগইন করুন। এখন "Apply for a New Passport" বাটনে ক্লিক করুন। এখন আপনি আপনার Passport Type সিলেক্ট করুন। যেমন সাধারণ পাসপোর্ট হলে "Ordinary Passport" এবং সরকারি আদেশে বা NOC এর মাধ্যমে পাসপোর্ট হলে "Official Passport" সিলেক্ট করুন।
উক্ত কাজ করা শেষ হয়ে গেলে আপনি "Save and continue" এ ক্লিক করুন। এরপর আপনার নিজের ব্যক্তিগত একটি পেজ আসবে। এখানে আপনি আপনার সকল ব্যক্তিগত তথ্য ইংরেজিতে সঠিকভাবে ও ছবিতে দেখানো উপায়ে পূরণ করুন।
এখানে আপনার নাম, তথ্য ও জাতীয় পরিচয়পত্র বা নম্বর দিন এবং Save and Continue তে ক্লিক করুন।
তথ্য সূত্রঃ 10minuteschool, eservicesbd.com
পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে
আপনারা এমন অনেকে আছেন যিনারা ই পাসপোর্ট তৈরি করতে চান। কিন্তু আপনারা জানেন না ই পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে। আপনারা যদি জেনে না থাকেন এই পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে তাহলে এখনই আপনারা জেনে নিন। তাহলে চলুন এখন জেনে নেওয়া যাক পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে?
২০২৩ সালের ই পাসপোর্ট আবেদন ফিগুলো নিম্নে দেখানো হলঃ
৫ বছরের জন্য পৃষ্ঠা সংখ্যা ৪৮ এর জন্য ফি এর পরিমাণ
- রেগুলার ডেলিভারি (১৫-২১ দিন) এর খরচ ৪,০২৫ টাকা
- এক্সপ্রেস ডেলিভারি (৫-৭ দিন) এর খরচ ৬,৩২৫ টাকা
- সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি (২ দিন) এর খরচ ৮,৬২৫ টাকা
৫ বছরের জন্য পৃষ্ঠা সংখ্যা ৬৪ এর জন্য ফি এর পরিমাণ
- রেগুলার ডেলিভারি (১৫-২১ দিন) এর খরচ ৬,৩২৫ টাকা
- এক্সপ্রেস ডেলিভারি (৫-৭ দিন) এর খরচ ৮,৬২৫ টাকা
- সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি (২ দিন) এর খরচ ১২,০৭৫ টাকা
১০ বছরের জন্য পৃষ্ঠা সংখ্যা ৪৮ এর জন্য ফি এর পরিমাণ
- রেগুলার ডেলিভারি (১৫-২১ দিন) এর খরচ ৬,৩২৫ টাকা
- এক্সপ্রেস ডেলিভারি (৫-৭ দিন) এর খরচ ৮,৬২৫ টাকা
- সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি (২ দিন) এর খরচ ১০,৩৫০ টাকা
১০ বছরের জন্য পৃষ্ঠা সংখ্যা ৬৪ এর জন্য ফি এর পরিমাণ
- রেগুলার ডেলিভারি (১৫-২১ দিন) এর খরচ ৮,০৫০ টাকা
- এক্সপ্রেস ডেলিভারি (৫-৭ দিন) এর খরচ ১০,৩৫০ টাকা
- সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি (২ দিন) এর খরচ ১৩,৮০০ টাকা
ই পাসপোর্ট সম্পর্কে সাধারণ জিজ্ঞাসা (FAQ)
প্রশ্নঃ পাসপোর্ট করতে কি কি লাগবে 2023?
উত্তরঃ পাসপোর্ট করতে যেসকল তথ্য লাগবে সেগুলো হলো
- জাতীয় পরিচয়পত্র
- জন্মনিবন্ধন সনদপত্র
- নাগরিক সনদপত্র
- পেশা প্রমাণের কাগজ
প্রশ্নঃ ১০ বছর মেয়াদি ই পাসপোর্ট 2023 কত টাকা?
উত্তরঃ ১০ বছর মেয়াদি ই পাসপোর্ট করতে খরচের হবে ৪৮ পৃষ্ঠার জন্য
- Regular Delivery ৫৭৫০ টাকা
- Express Delivery হলে ৮০৫০ টাকা
প্রশ্নঃ বাংলাদেশের পাসপোর্ট কত প্রকার?
উত্তরঃ বাংলাদেশের পাসপোর্ট ৩ প্রকার। সেগুলো হলোঃ
- লাল মলাট যা কূটনৈতিক পাসপোর্ট
- নীল মলাট যা দাপ্তরিক পাসপোর্ট
- সবুজ মলাট যা নিয়মিত বা সাধারণ পাসপোর্ট
শেষ কথা
আজকে আমাদের আর্টিকেলের প্রধান আলচ্য বিষয় ছিলো ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২৩ - পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে। আশা করছি আপনি সম্পূর্ণ আর্টিকেল্টি মনোযোগ সহকারে পড়ে অনেক উপকৃত হয়েছেন। এরকম আরো তথ্যপূর্ণ আর্টিকেল পড়তে প্রতিদিন নিয়োমিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।
আর হ্যা আজকের আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আজকে এই পর্যন্তই। দেখা হবে পরবর্তি কোন একটি আর্টিকেলে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url