কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় - কবুতরকে রসুন খাওয়ালে কি হয়

আপনাদের সুবিধার্থে আমরা আজকের পোস্টটিতে কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় ও কবুতরকে রসুন খাওয়ালে কি হয় সম্পর্কে আলোচনা করব। তাই শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকুন।
কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয়
কবুতর লালন পালন করা হলো একটি শখের কাজ। আমাদের দেশে প্রায় অনেকে শখের বসে কবুতর পালন করে। আবার অনেকে বাণিজ্যিক ভাবে পালন করে থাকে। তবে বাণিজ্যিকভাবে কবুতর পালনের ক্ষেত্রে কোন কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় সেগুলো পালন সম্পর্কে খেয়াল রাখতে হবে।
পোস্টসচিপত্রঃ

ভূমিকা

কবুতর শখের বসে পালন করা হলেও অনেকেই এটি বাণিজ্যিকভাবে পালন করার মাধ্যমে অনেক লাভবান হয়েছেন। আমাদের পৃথিবী জুড়ে প্রায় ১২০ প্রজাতির কবুতর পাওয়া যায়। তার মধ্যে আমাদের বাংলাদেশেই ২০ প্রজাতির কবুতর পাওয়া যায়। এই সকল কবুতরের মধ্যে গিরিবাজ কবুতর সব থেকে বেশি পরিমাণে ডিম এবং বাচ্চা দিয়ে থাকে। এছাড়াও আরো অনেক প্রজাতি রয়েছে যারা অনেক ভালো পরিমাণে ডিম দিয়ে থাকে।

আপনি যদি আজকের এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকার পড়তে থাকেন তাহলে আপনি কোন জাতের কবুতর পালন লাভজনক, কবুতর কত মাস বয়সে ডিম দেয়, কি খাওয়ালে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দেয়, কবুতর কত মাস বয়সে ডিম দেয় এই সকল বিষয় ছাড়াও আরো অনেক বিষয়ে জানতে পারবেন। তাই সকল বিষয়ে জানতে শেষ অবদি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।

কোন জাতের কবুতর পালন লাভজনক

কোন জাতের কবুতর পালন করলে তুলনামূলক বেশি পরিমাণ লাভবান হওয়া যাবে সেই সম্পর্কে আপনাদেরকে এখন আমরা জানাবো। তার পাশাপাশি কোন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কবুতর পালন করলে খামারেরা অনেক পরিমাণ লাভবান হবে সেই সম্পর্কেও আপনাদেরকে এখন আমরা জানাতে চলেছি। তো চলুন বন্ধুগণ এখন জেনে নেওয়া যাক।

পূর্বে যেহেতু কবুতরের সকল খাবারের দাম তুলনামূলকভাবে বর্তমানে থেকে অনেক কম ছিল তাই সেই সময় কবুতরের খামার করে খামারেরা অনেক পরিমাণে লাভবান হত। কিন্তু বর্তমানে এই কবুতরের খাবারের দাম অনেকটাই বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে খামারের আগের তুলনায় এখন তেমন একটা লাভবান হচ্ছে দেখা যায় না।

বর্তমান খামারেরা যেহেতু বিভিন্ন ধরনের বিদেশি কবুতর পালনে আগ্রহ প্রকাশ করছে তাই তাদের ক্ষেত্রে লাভের তুলনা টা একটু বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে আপনি যদি দেশের সকল কবুতর লালন পালন করা চিন্তাভাবনা করে থাকেন তাহলে আপনি খুব একটা লাভবান হতে পারবেন না। ফেন্সি যাদের বৈদেশিক কবুতরগুলো অনেক ভাল পরিমানে ডিম এবং বাচ্চা দেয়। আর এই কবুতরের বাচ্চার দাম বেশি সকল কবুতরের তুলনায় অনেকটাই বেশি।

তাই আপনি যদি দেশি কবুতর পালনের থেকে বিদেশে জাতের কবুতর পালন করেন তাহলে আপনার লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে। এখন যদি দেশী এবং ফেন্সি তাদের কবুতরের মধ্যে ঝুঁকির কথা তুলনা করা হয় তাহলে ঝুঁকির ক্ষেত্রে কবুতর একটু তুলনামূলক বেশি ঝুঁকিতে থাকবে।
তবে আপনি যদি কবুতরের সকল লক্ষণ গুলো ঠিকঠাক খেয়াল করে সঠিক সময় সঠিক চিকিৎসা প্রদান করেন তাহলে কোন প্রকার ঝুঁকিতে আপনি পড়বেন না। তবে যদি দেখেন আপনার কবুতরের ঠান্ডা লেগেছে অথবা আপনার যদি বুঝতে পারেন আপনার কবুতরের কোন উপকার অসুখ হয়েছে তাহলে সে সময় যদি রোগ নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা দেওয়া হয় তাহলে কবুতর পালনের কোন খামারে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।

তবে সব শেষ একটা বিষয়ে আমাদের সকলকে লক্ষ্য নিয়ে রাখতে হবে প্রত্যেক খামারের ক্ষেত্রে উচিত সকল ধরনের কবুতরের জাতির প্রতিদিন ট্রিটমেন্ট করা। কোন সকল কবুতর ঠিকঠাক খাবার খাচ্ছে, কোন সকল কবুতর ঠিকঠাক খাবার পানি গ্রহণ করছে না সে সকল বিষয়ে দেখাশোনা করে সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা প্রদান করা। তাহলে আপনি লাভবান হতে পারবেন। অন্যথায় আপনাকে ক্ষতিগ্রস্তের শিকার হতে হবে।

কবুতর কত মাস বয়সে ডিম দেয়

আমরা যারা নতুন খামারিরা রয়েছি, অথবা আমরা যারা নতুন কবুতর পালন শুরু করেছি তাদের সকলেরই প্রশ্ন একটি মা কবুতর কত মাস বয়সে প্রথম ডিম দেয়। আপনিও যদি এই সম্পর্কে জানার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে থাকেন তাহলে অবশ্যই নিচে আপনি সম্পূর্ণ বিষয় জানতে পারবেন সে সম্পর্কে। চলুন তাহলে দেখে নেই সেগুলো সম্পর্কে।

যেকোনো কবুতর সাধারণত ২০ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত জীবিত থাকে। আর যদি জংলি কবুতরের কথা বলি তাহলে যৌন কবুতর পাঁচ বছর এবং গৃহপালিত সকল ধরনের কবুতর 10 থেকে 15 বছর বেঁচে থাকে। এ বেঁচে থাকা কালিন তারা প্রতি মাসে অন্তত গড়ে একবার করে ডিম বাচ্চা দেয়।
একটি স্ত্রী কবুতর বাচ্চা থেকে যখন তার বয়স পাঁচ মাস হয় তখন সে প্রথমবারের মতো ডিম দেয়। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে কিছু কিছু কবুতর সাত মাস পর্যন্ত সময় নিতে পারে। এই সকল ধরনের কবুতর দুই দিন অর্থাৎ ৪৮ ঘন্টার ভেতরে তাদের দুটি ডিম দিয়ে থাকে। ডিম দেওয়ার আবার ৪০ থেকে ৫০ দিনের ব্যবধানে পুনরায় আবার নতুন ডিম দেয়।
তবে আপনি যদি একটু লক্ষ্য করেন তাহলে দেখবেন যে কবুতর বিকেলের দিকে অথবা সন্ধ্যার দিকে ডিম দিয়ে থাকে। মা কবুতর যখন প্রথমবারের মতো ডিম প্রদান করে তখন প্রথম ডিমের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে। দুটি ডিম সঠিকভাবে প্রদান করার পরে তারপরে কবুতর তা দেয় ডিমে। তবে আপনি যদি লক্ষ্য করেন প্রথম ডিম দেওয়ার পরে কবুতর ডিমে তা দিচ্ছে তাহলে বুঝে নেবেন সেই কবুতর দ্বিতীয় ডিম দিবে না।

তবে অনেক ক্ষেত্রে কোন কোন কবুতর তিনটি ডিমও দিয়ে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কবুতর দুটি ডিম দেয়। যে সকল কবুতর তিনটি ডিম প্রদান করে সেই সকল কবুতরের ডিম প্রথম দুটি ডিমের তুলনায় তৃতীয় ডিমটি অনেক ছোট হয়। সকল কবুতরের ডিমের গড় ওজন হয়ে থাকে প্রায় ১২ থেকে ১৫ গ্রাম পর্যন্ত।

কি খাওয়ালে কবুতর তাড়াতাড়ি ডিম দেয়

আপনারা যারা কবুতর পালন করে থাকেন অথবা যারা কবুতর পালন করার চিন্তা ভাবনা করছেন কিম্বা যারা পূর্বে কবুতর পালন করেছেন তারা অনেকে জানতে চেয়ে থাকেন কবুতরকে কি খাওয়ালে খুব তাড়াতাড়ি ডিম দিবে। এখন আমরা আপনাদের এই প্রশ্নেরই সঠিক আনসার দেওয়ার চেষ্টা করব।

আমরা সকলে সাধারণত বাড়িতে কবুতরকে ভুট্টা, গম, চাউল এ সকল দানা জাতীয় খাবার খেতে দিয়ে থাকি। এই সকল দানা জাতীয় খাবারের পাশাপাশি আপনি যদি নিম্নের দেখানো সকল দানা জাতীয় খাবার কবুতরকে খাওয়ান, তাহলে কবুতর খুব দ্রুতই ডিম দিবে। চলুন তাহলে এখন আমরা জেনে নেই কোন সকল খাবার কবুতরকে খাওয়াতে হবে।

যেসকল কবুতরকে খাওয়ালে কবুতর খুব তারাতারি ডিম দেয় সেগুলো হলোঃ
  • গ্রিড
  • মাটি
  • ঘাস
  • ইটের গুড়া
  • ডিমের খোসা
  • কয়লা
গ্রিডঃ গ্রিড কবুতরের জন্য অনেক উপকারি একটি উপাদান। এটি আপনি বাজারে খুব সহজেই কিনতে পেয়ে যাবেন। এই খাবার কবুতর খেতেও অনেক পছন্দ করে থাকে। তাই আপনি খুব সহজেই তাদেরকে খাওয়াতে পারবেন।

মাটিঃ আপনারা যারা বাড়িতে কবুতরকে ছেড়ে দিয়ে লালন পালন করে থাকেন তারা অবশ্যই লক্ষ্য করে থাকবেন কবুতর মাটি খেয়ে থাকে। কবুতর এই মাটি গ্রহণ করে থাকে তার কারণ হলো এটি কবুতরের জন্য অনেক ভালো একটি উপাদান। আর আপনি যদি খাচাতে বদ্ধ অবস্থায় কবুতর পালন করেন তাহলে অবশ্যই কবুতরকে মাটি খেতে দিন।

ঘাসঃ আপনি যদি ছেড়ে কবুতর পালন করে থাকেন তাহলে খেয়াল করবেন যে কবুতর কাঁচা ঘাস খেতে অনেক পছন্দ করে থাকে। তাই আপনার কবুতর যদি খাচায় আবদ্ধ থাকে তাহলে অবশ্যই তাদেরকে ঘাস খেতে দিন। ঘাসের পাশাপাশি আপনি দিতে পারেন মিষ্টি কুমড়ার গাছ পুঁইশাকের গাছ কচি লতা পাতা ইত্যাদি।
ইটের গুড়াঃ খাঁচার কবুতরকে অবশ্যই ইটের গুড়া খেতে দিন। কবুতর যদি ইটের গোড়া খায় তাহলে ভেতরের কুসুম অনেক ভালো হয় কবুতরের ডিমের। তার পাশাপাশি কবুতরের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং কবুতরের ভেতরের ডিম খুব তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পায়।

ডিমের খোসাঃ কবুতরকে অবশ্যই ডিমের খোসা খেতে দিন। এতে করে কবুতরের ডিমের খোসা অনেক শক্ত হবে এবং পুষ্ট হবে। যাতে করে কবুতরের ডিমের সহজে ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। আপনি এই ডিমের খোসা যারা বাজারে রাতের বেলা ডিম সিদ্ধ করে বিক্রি করে তাদের কাছে পেয়ে যাবেন। আপনি ডিমের খোসা নিয়ে সুন্দর করে চূর্ণ করে তারপরে কবুতরকে খেতে দিন।

গিরিবাজ কবুতর চেনার উপায়

আপনি কি নতুন গিরিবাজ কবুতর পালার জন্য চিন্তা ভাবনা করছেন? অথবা আপনি কি গিরিবাজ কবুতর পালার জন্য কবুতর ক্রয় করতে চাচ্ছেন? তাহলে অবশ্যই আপনাকে গিরিবাজ কবুতর চিনতে হবে। তাই আপনি এই অংশে কিভাবে চিনবেন কোনটি গিরিবাজ কবুতর সেই উপায় সম্পর্কে আপনাদেরকে এখন আমরা জানাবো।
গিরিবাজ কবুতরের প্রকারভেদগুলো হলো
  • সবুজ গলা
  • জিরা গলা
  • বাঘা গিরিবাজ
  • ঘিরা ছুল্লি গিরিবাজ
  • লাল ছুল্লি গিরিবাজ
  • লাল চিলা গিরিবাজ
  • কালো মশালদমম গিরিবাজ
সবুজ গলা গিরিবাজ কবুতরের বৈশিষ্ট্য গুলো হলো
  • এই কবুতর অনেক পরিষ্কার ও হালকা সবুজাভ হয়ে থাকে
  • সম্পূর্ণ ডানা আর পিঠ একদম সাদা হয়। তবে অনেক সময় কালো ধরণের হয়ে থাকে
  • ডানার সকল পালক সাধারণত দুই ধরণের হয়ে থাকে
  • চোখের মনি অনেকটাই কালো হয়
  • সম্পূর্ণ চোখের চারিদিকে গোল সাদা রং হয়ে থাকে
  • কবুতরের মনি অনেকটাই ছোট ধরণের হয়ে থাকে। এখানে উল্লেখ্য যে, যেই কবুতরের মনি যত ছোট হবে সেই কবুতরের পারফর্মান্স তত ভালো হয়ে থাকে।
লাল চিলা গিরিবাজ কবুতরের বৈশিষ্ট্য গুলো হলোঃ
  • গলার মালার রং জিরার মতো হালকা সবুজাভ হয়ে থাকে
  • ডানা এবং কবুতরের শরীর অনেকটাই ধবধবে সাদাময় হয়ে থাকে
  • চোখের মনি অনেকটাই কালো হয়
  • সম্পূর্ণ চোখের চারিদিকে গোল সাদা সার্কেল হয়ে থাকে।
বাঘা গিরিবাজ কবুতরের বৈশিষ্ট্য গুলো হলোঃ
  • এই জাতের কবুতর ও অনেকটাই গলার কাছে থাকে সবুজের মতো থাকে
  • ডানা এবং পিঠজুড়ে ধুসর বর্ণের হয়ে থাকে। তবে অনেক সময় মাঝে মাঝে কালো বর্ণের ও হয়ে থাকে
  • দুটি ডানতেই শেষের দিকে ১০ টি করে পালক থাকে
  • দুটি ডানাতেই কালো রঙের পর থাকে
  • চোখের মনি কালো হয়
  • ছোখের চারপাশে সার্কেল হয়ে সাদা হয়ে থাকে।
ঘিয়া ছুল্লি গিরিবাজ কবুতরের বৈশিষ্ট্য গুলো হলোঃ
  • এই জাতের কবুতরের সম্পূর্ণ শরীর ঘিয়া রঙের হয়ে থাকে
  • ঠোট চিকন এবং মাঝারি আকৃতির হয়
  • এই কবুতরের আবার দুটি জাত রয়েছে। ১. চুইঠাল এবং ২. ন্যাড়া।
লাল চিলা গিরিবাজ কবুতরের বৈশিষ্ট্য গুলো হলোঃ
  • এদের পুরো শরীর কালচে লাল বর্ণের হয়ে থাকে
  • এদের লেজের ১০ টি পালক কালো হয়
  • ডানার শেষ ১০ টি পালক ও কালো রঙের হয়ে থাকে
  • চোখের মনি একেবারে কালো রঙের হয়ে থাকে
  • চোখের চারিদিকে বৃত্তের মতো গোলাকৃতি থাকে ।
কালো মশালদম গিরিবাজ কবুতরের বৈশিষ্ট্য গুলো হলোঃ
  • এই জাতের কবুতরের লেজের পালকের মধ্যে ১০ টি সাদা হয়। আর বাকিগুলো কালো হয়
  • গলার মালা অনেক চকচকে এবং সবুজাভ হয়ে থাকে
  • ঠোট চিকন এবং মাঝারি আকৃতির হয়ে থাকে।
এই সকল গিরিবাজ কবুতর থাকলেও ভালো জাতের গিরিবাজ কবুতর আপনি কিভাবে চিনবেন সেই সম্পর্কে আপনাদের নিম্ন ধারণা দেওয়া হবে। আশা করছি আপনাদের নিম্নের যদি ধারণাটি মনোযোগ সহকারে দেখেন তাহলে আপনার সকল কিছু ক্লিয়ার হয়ে যাবে।
  • ভালো জাতের আসল গিরি বাজার চোখের মনি সেকেণ্ডে সেকেন্ডে পরিবর্তন হয় অর্থাৎ ছোট বড় হতে দেখা যায়। তবে চোখের মনের অবস্থান চোখ থেকে অনেক ভেতরে থাকে।
  • কবুতরের চোখের দিকে যদি দূর থেকে তাকিয়ে দেখা যায় তাহলে মনে হবে চোখ যেন পানিতে ভাসছে। আর এই কবুতরের পাখনা লেজের সমান হবে অথবা লেজ থেকে অল্প একটু ছোট হবে।
  • কবুতরের বুক অন্যান্য কবুতরের তুলনায় অনেকটাই উঁচু হবে।
  • আপনি যদি এদের গলায় হাত দেন তাহলে বুঝতে পারবেন এদের গলা তুলনামূলক কম পরিমাণে স্প্রিং করবে।
  • ঘাড় লম্বা এবং খাটো হতে পারে। এদের চোখের চারিদিকে কালো অথবা হালকা কালো অথবা সাদা রঙের একটি গোল সার্কেল দেখতে পাবেন।
  • দুটি পাখা দ্বারা পায়ের রানের শেষ পর্যন্ত ঢাকা থাকবে।

কবুতরকে রসুন খাওয়ালে কি হয়

আমরা সকলেই জানি রসুন হলো পিয়াজ জাতীয় একটি ঝাঁজালো সবজি। যা আমরা রান্নার মসলা হিসেবে রান্নাতে ব্যবহার করে থাকি। আবার অনেকে এটিকে ভেষজ ব্যবহার করে থাকেন। তবে আপনি এই রসুন কবুতরকে খাওয়াতে পারেন। রসুন খাওয়ালে যে সকল উপকারিতা গুলো হবে সেগুলো সম্পর্কে আমরা নিম্ন আলোচনা করব। এর পাশাপাশি কবুতরের ওষুধ খাওয়ানো সকল নিয়মগুলো আপনাকে জানাবো।

কবুতরকে রসুন খাওয়ালে যেসকল উপকারিতাগুলো হবে সেগুলো হলো
  • আপনি যদি কবুতরকে রসুন খান তাহলে এটি কবুতরের শরীরের ভেতরে এন্ড্রোবায়োটিক ওষুধের মত কাজ করবে। যার ফলে কবুতরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। তার পাশাপাশি কবুতরের শ্বাসনালী ও বুকের জীবাণুগুলো ধ্বংস করে দেবে। কবুতরের যে রোগ গুলো হয় সেই রোগের জন্য আক্রমণকারী জীবাণুর সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা অর্থাৎ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে দেবে।
  • এটি কবুতরের সকল রোগের জন্য অনেক উপকারী। কবুতরের সর্দি কাশির জন্য দারুন সহায়ক হবে। কবুতরের যন্ত্র ও লিভারের বিভিন্ন ধরনের উপকার সাধন করবে। কবুতরকে সকল ভাইরাস জনিত ও ব্যাকটেরিয়ার জন্য রোগের হাত থেকে রক্ষা করবে। আপনি যদি কবুতরকে নিয়মিত রসুন খাওয়ান তাহলে কবুতরের কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হবে।
  • এর পাশাপাশি রক্তের সুগারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করবে। যার ফলে কবুতরের শরীরের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া সঠিক থাকবে। কবুতরকে সকল ধরনের ইনফেকশন ও ব্যাকটেরিয়ার প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।
কবুতরকে যেভাবে রসুন খাওয়াতে হবে সেটি ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে এখন নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। আশা করছি আপনি এখান থেকে কবুতরকে কিভাবে রসুন খাওয়াতে হয় তার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারবেন বিস্তারিত হবে।

প্রথমে কবুতরের জন্য দুই থেকে তিনটা মাঝারি সাইজের রসুনের কোয়া সুন্দরভাবে পরিষ্কারভাবে ছুলে নেবেন। তারপর সেগুলো থেতলে রস বের করবেন। অথবা থেতলে নিয়ে এক লিটার পানিতে মিশিয়ে নিবেন। তারপর সেগুলো কবুতরকে প্রতি সপ্তাহে এক থেকে দুই দিন খেতে দিবেন।

আপনি যদি উপরে দেখানো নিয়ম অনুসরণ করতে না পারেন তাহলে আপনি দুই থেকে তিনটি রসুনের কোয়া ছুলে নিয়ে তারপর সেগুলো থেতলে নিয়ে ১ লিটার পরিষ্কার পানিতে রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে সেটা হালকা গরম করে নিবেন। এরপর সেগুলো ঠান্ডা করে নিয়ে কবুতরকে প্রতি সপ্তাহে এক থেকে দুই দিন খেতে দিবেন।

আপনি যদি উপরের দেখানো দুটি নিয়মে অনুসরণ করতে না পারেন তাহলে আপনি রসুনের কোয়া ছোট ছোট করে কেটে নিয়ে কবুতরকে যে সকল খাবার দেন প্রতিদিন তার সাথে মিশিয়ে নিয়ে প্রতি সপ্তাহে এক থেকে দুই দিন খেতে দিবেন।

আপনি যদি উপরের বলা নিয়মগুলো না বুঝে থাকেন তাহলে আপনি নিচের এই ভিডিওটি দেখতে পারেন। আশা করছি আপনার এখান থেকে বুঝতে কোন অসুবিধা হবে না।

কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয়

আপনারা অনেকেই হয়তোবা জানেন আবার অনেকেই হয়তোবা জানেন না যে কোন জাতের কবুতর সব থেকে বেশি বাচ্চা দেয়। আমরা যারা কবুতর পালন করে থাকি তারা হয়তো একটু খেয়াল করলে দেখবেন যে কিছু কবিতার রয়েছে যারা বাচ্চা সঙ্গে থাকা অবস্থায়ও আবার পুনরায় ডিম দিচ্ছে।

আবার অনেক কবুতর রয়েছে যাদের বাচ্চা অনেক বড় হয়ে যাওয়ার পরেও কোন প্রকার ডিম দিচ্ছে না। তবে কিছু জাতের কবুতর রয়েছে যেগুলো খুব ভালো পরিমাণে ডিম এবং বাচ্চা দেয়। তবে ডিম বাচ্চা নির্ভর করে কবুতরের জাতের উপর। এখন আমরা সকলেই জানবো কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয়।

সবথেকে বেশি বাচ্চাদের গিরিবাজ কবুতর। গুলা সাইজ অনেক তুলনা ছোট হয় যার জন্য এই কবুতরের শরীরে এনার্জিও প্রচুর পরিমাণে থাকে। অনেক বেশি পরিমাণে এনার্জি থাকার কারণে এই কবুতর অনেকক্ষণ এবং অনেক দূর দূরান্ত পর্যন্ত উড়তে পারে। যার ফলে এই সকল কবুতর আনতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের খাবার গ্রহণ করে। আর এই বিভিন্ন ধরনের খাবার গ্রহণের কারণে তাদের শরীরের ভেতরের ডিমের বৃদ্ধি ও খুব তাড়াতাড়ি এবং বেশি পরিমাণে হয়।

এই কবুতর গুলা অন্য যাদের কবুতরের ডিমও খুব সহজে ফোটাতে পারে। আপনি যদি কিং কবুতর অথবা সিরাজী কবুতর অথবা যেকোনো বড় বড় জাতের কবুতরের ডিম অথবা বাচ্চা এর কাছে দেন তাহলে দেখবেন এটি খুব তাড়াতাড়ি খাবার খাইয়ে খুব তাড়াতাড়ি বড় করে ফেলছে। তাহলে বুঝতে পারছেন এ গিরিবাদ জাতের কবুতরের কতটুকু এনার্জি রয়েছে।
আরো পড়ূনঃ
এই গিরিবাজ জাতের কবুতরের পাশাপাশি জালালী যাদের কবুতর ও প্রচুর পরিমাণে ডিম এবং বাচ্চা দেয়। এই গিরিবাজ জাতের কবুতর এবং জালালি জাতের কবুতর খুবই কম পরিমাণে ডিম নষ্ট করে। যদি বাচ্চার বয়স ১৫ দিন হয়ে যায় তাহলে দেখবেন এই কবুতর ডিম দেওয়ার জন্য আবার পুনরায় প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন।

আশা করছি আপনি এতক্ষণে বুঝতে পেরে গেছেন কোন জাতের কবুতরটি আসলে খুব বেশি পরিমাণে বাচ্চা প্রদান করে। তবে একটি বিষয় লক্ষ্যনীয় যে জালালী জাতের কবুতর ও গিরিবাদ যাদের কবুতর গুলোর মধ্যেই পড়ে। যার ফলে এই জাতের কবুতরগুলো অনেক বেশি পরিমাণে ডিম বাচ্চা দেয়।

কোন কবুতর বেশি উড়ে

যারা কবুতর দিয়ে রেসলিং খেলতে পছন্দ করেন তাদের কাছে সবার প্রথম পছন্দ হলো গিরিবাজ। এই গিরিবাজ জাতের কবুতর অনেক বেশি পরিমাণে দীর্ঘ সময় ধরে উড়তে পারে। তার পাশাপাশি এই জাতের কবুতর অনেক বেশি পরিমাণে ডিম বাচ্চা দেয়। ইতিপূর্বে আমরা সকলেই কোন জাতের কবুতর বেশি বাচ্চা দেয় সেই সম্পর্কে জানতে পেরেছি। এখন আমরা জানবো কোন কবুতর সব থেকে বেশি পরিমাণে উড়ে।

গিরিবাজ জাতের কবুতর পাক ভারতে এদের উৎপত্তিস্থল হলেও এ জাতের কবুতর প্রায় সারা দেশে এখন পাওয়া যায়। এইবার যাদের কবুতর সাধারণত তিন ধরনের হয়ে থাকে। গিরিবাজ জাতের কবুতরের তিন ধরনের জাতের নাম হল
  • হাই ফ্লাইয়ার/টিপলার
  • লো ফ্লাইয়ার
  • কালারিং
কবুতরের এই জাতের মধ্যে হাই ফ্লাইয়ার/টিপলার যাদের কবুতর অনেক দীর্ঘ সময় পর্যন্ত সবথেকে উঁচুতে উড়তে পারে। এই জাতের কবুতরটি ফ্লাইং টুর্নামেন্টে দীর্ঘ 22 ঘন্টা পর্যন্ত উড়ার রেকর্ড রয়েছে। এই কবুতর দিয়েই কবুতরের ফ্লাইং রেসলিং অর্থাৎ কবুতর উড়ানোর খেলা হয়ে থাকে। এই খেলাটি টুর্নামেন্ট আকারে অন্যান্য খেলার মতনই ছাড়া হয়।

এই টুর্নামেন্টে যাওয়ার কবুতর সব থেকে বেশি অর্থাৎ দীর্ঘ সময় পর্যন্ত পড়বে সেই হবে প্রকৃত বিজয়ী। কবুতরের এই ফ্লাইং রেসলিং খেলাটি আমেরিকা, লন্ডন, ভারত, পাকিস্তান এমনকি বাংলাদেশও টুর্নামেন্ট হয়।

গিরিবাজ কবুতরের দাম

কবুতরের যত সকল জাত রয়েছে আমাদের বিশ্বে তাদের মধ্যে সবথেকে ভালো জাতের কবুতর হলো গিরিবাজ। এই কবুতরের জাত কোন প্রকার বাচ্চা বেশি নষ্ট করে না। তার পাশাপাশি এই কবুতর রেসলিং খেলার জন্য ব্যবহার করা হয়। এই জাতের কবুতর প্রায় অনেকটা উঁচুতে উঠতে পারে। তার পাশাপাশি অনেক উপরে উড়তেও পারে।

এই জাতের কবুতরটি অনেক ধূর্ত এবং চালাক প্রকৃতির হয়। প্রতিজোড়া গিরিবাজ কবুতরের দাম ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। আর গিরিবাজের বাচ্চার ক্ষেত্রে প্রতি জোড়া বাচ্চার দাম ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০ টাকার পর্যন্ত হয়ে থাকে।

আপনি যদি রেসলিং খেলার জন্য গিরিবাজ কবুতর কিনার কথা বিবেচনা করে থাকেন তাহলে প্রতি জোড়া গিরিবাজ কবুতরের জন্য আপনাকে খরচ করতে হবে সর্বনিম্ন ৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত।

কবুতরের জাত সম্পর্কে সাধারণ জিজ্ঞাসা (FAQ)

প্রশ্নঃ গিরিবাজ কবুতর চেনার উপায় কি?
উত্তরঃ গিরিবাজ কবুতর চেনার উপায়গুলো হলোঃ
  • চোখের মনি সেকেন্ডে সেকেন্ডে ছোট বড় হতে থাকবে
  • পখনা লেজের সমান অথবা ছোট হবে
  • চোখ দূর থেকে দেখলে মনেহবে চোখ পালিন মতো
  • দুটি পাখনা দ্বারা পায়ের রান পর্যন্ত ঢাকা থাকবে
  • বুক অনেকটা চউড়া এবং উচু থাকবে
প্রশ্নঃ সবচেয়ে সুন্দর কবুতর কোনটি?
উত্তরঃ সবথেকে সুন্দ কবুতর বলে বিবেচনা করা হয় নিকোবর পায়রা কবুতরের জাতকে।

প্রশ্নঃ কবুতরের বাচ্চা কত দিনে উড়তে পারে?
উত্তরঃ কবুতরের বাচ্চা জন্মের পর থেকে ২৬ দিন বয়স পরে উড়তে পারে।

প্রশ্নঃ কবুতর ভাত খেলে কি হয়?
উত্তরঃ কবুতর যদি নিয়মিত ভাত খায় তাহলে কবুতরের বাত রোগ হতে পারে।

প্রশ্নঃ গিরিবাজ কবুতর এর দাম কত?
উত্তরঃ একজোড়া গিরিবাজ কবুতরের দাম ৬০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা হয়ে থাকে।

প্রশ্নঃ একটা কবুতর প্রতিদিন কত গ্রাম খাবার খায়?
উত্তরঃ একটি কবুতরের প্রতিদিনের খাবারে পরিমাণ হলো
  • ছোট আকারের কবুতর ২০-৩০ গ্রাম
  • মাঝারি আকারের কবুতর ৩৫-৫০ গ্রাম
  • বড় আকারের কবুতর ৫০-৬০ গ্রাম খাবার খায়

শেষ কথা

আপনারা আজকের পোস্টটির মাধ্যমে কোন জাতের কবুতর বেশির বাচ্চা দেয় এবং কবুতর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারলেন।আপনার যদি এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। এই রকম তথ্যবহুল আর্টিকেল প্রতিদিন ফ্রীতে পড়তে আমাদের সাথেই থাকুন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url