গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া যাবে না সম্পর্কে জেনে নিন

আজকের পোস্টটিতে আমরা গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া যাবে না এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব। গর্ভবতী মায়েরা গর্ভকালীন সময়ে কি কি খাবার গ্রহণ করবে এবং কি কি খাবার খাওয়া যাবেনা এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব।
গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া যাবে না
মা হওয়ার অনুভূতিটা পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর একটি অনুভূতি। গর্ভকালীন অবস্থায় আমাদের অনেক কিছু সম্পর্কে জানতে হয়। যারা নতুন মা হচ্ছে তারা হয়তোবা গর্ভকালীন অবস্থার অনেক করণ সম্পর্কে তেমন একটা জানেন না। আজকের এই পোস্টটি সেই সকল বিষয়ের ওপর ভিত্তি করেই প্রস্তুত করা হয়েছে।
পোস্টসূচিপত্র

ভূমিকা

গর্ভকালীন অবস্থায় আমরা অনেকেই অনেক ভুল সিদ্ধান্ত নেই বলে অনেকের গর্ভপাত হয়ে যায়। আমরা যদি সঠিকভাবে আমাদের গর্ভকালীন অবস্থার পরিচর্যা বিষয়ে জানি তাহলে আমাদের এমন খুব একটা বেশি হবে না। গর্ভকালীন অবস্থায় আমরা কোন খাবার গুলো খেতে পারবো কোনগুলো পারবো না সেই বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

আপনি যদি আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকেন তাহলে আপনি গর্ভাবস্থায় কি কি কাজ করা নিষেধ, গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়, গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না এই সকল বিষয়সহ আরো অনেক বিষয় বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাহলে চলুন এখন বেশি দেরি না করে বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়া যাক।

গর্ভাবস্থায় কি কি কাজ করা নিষেধ

গর্ভকালীন অবস্থায় আমাদের কি কি কাজ করা যাবে না এই সকল বিষয়ে আমরা অনেকেই খুব একটা ভালো জানিনা। আমরা যদি সেই সকল বিষয় সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে থাকি তাহলে আমরা আমাদের শরীরের যত্ন সহ বাচ্চার যত্ন ও নিতে পারবো। আর সঠিক নিয়ম মেনে চললে অনেক সুস্থ কালীন অবস্থা পার করতে পারব।

ভারী কাজ করাঃ গর্ভকালীন অবস্থায় ভারী কাজ করা যাবে না। আমরা অনেকেই না বুঝে গর্ভকালীন অবস্থায় ভারী কাজ করে থাকি। যার ফলে অনেকের গর্ভপাত হয়ে যায়। গর্ভকালীন অবস্থায় আমাদেরকে ভারী কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

যেমন ভারী কোন জিনিস ওঠানো, ভারী কোন ব্যাগ হাতে নিয়ে দূরে কোথাও যাওয়া, নিচু হয়ে ভারী কোন জিনিস উপরে তোলা, পেটে চাপ দিয়ে বসে কোন ভারী কাজ করা। এই সকল কাজগুলো গর্বকালীন অবস্থায় কোনভাবেই করা যাবে না।
নিচু হয়ে কোন কিছু তোলাঃ গর্ভকালীন অবস্থা অনেক সময় আমরা না বুঝতে পেরে নিচু হয়ে ভারী কোন জিনিস উপরে তুলে ফেলি। মাটিতে করো পড়ে থাকা জিনিস হাতে তুলি। এই সময় আমাদের পেটে চাপ লাগে। যা পেটের সন্তানের ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই গর্ভকালীন অবস্থায় নিচু হয়ে কোন কাজ করা যাবে না।

উপুড় হয়ে শোয়াঃ আমাদের অনেকেরই বদ অভ্যাস রয়েছে উপুড় হয়ে শোয়ার। উপর হয়ে শোয়ার ফলে পেটে চাপ লাগে। যার ফলে বাচ্চার ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই গর্ভকালীন অবস্থায় কনভাবেই উপর হয়ে শোয়া যাবেনা।

থালা বাসন মাজাঃ থালা বাসন মাজা অনেক ভারী একটি কাজ এর মধ্যে একটি। গর্ভকালীন অবস্থায় কখনোই পেটে চাপ লাগিয়ে বসে থেকে থালা বাসন মাজা যাবেনা। তার ফলে পেটের সন্তানের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

ভ্রমন করাঃ গর্ভকালীন অবস্থায় দূরের কোন রাস্তা জার্নি করা যাবে না। গর্ভকালীন অবস্থায় কোথাও ভ্রমণ করা যাবে না। আমাদের সবাইকে এ বিষয়গুলো নজর রাখতে হবে। এই সময়টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়। তাই কোন প্রকার ঝাঁকি শরীরে লাগানো যাবে না। গর্ভকালীন অবস্থায় দুরের রাস্তা ভ্রমণ করাই উচিত নয়।

পেটে চাপ দিয়ে বসাঃ গর্ভকালীন অবস্থায় পেটের উপর চাপ দিয়ে বসা যাবে না। হালকা হয়ে বসতে হবে। কোনো অবস্থাতেই যেন পেটে চাপ না লাগে সেই দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া যাবে না

গর্ভকালীন অবস্থায় কি কি খাওয়া যাবেনা এ বিষয়ে আমরা অনেকেই জানিনা। না জানার ফলে অনেকে ভুলভাল খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে যায় বা বাচ্চার ক্ষতি হয়ে যায়। অনেকের বাচ্চা গর্ভেই মারা যায়। আবার অনেকের বাচ্চা অনেক গর্ভকালীন ত্রুটি নিয়েও জন্মগ্রহণ করে। কোন কোন খাবার গুলো খাওয়া যাবেনা এ বিষয়ে আমাদেরকে নজর রাখতে হবে।

গর্ভকালীন অবস্থায় আমরা কখনোই কাঁচা পেঁপে খাব না পেঁপের আঠায় অনেক পরিমাণে এসিড থাকে ফলে ব্লেডিং হয়ে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে। কোন প্রকার ঠান্ডা বা কোমল পানীয় জাতীয় জিনিস খাওয়া যাবে না। যেমন কোল্ড ড্রিংকস সেভেন আপ পেপসি ইত্যাদি। গর্ভকালীন অবস্থায় আনারস খাওয়া যাবেনা।
গর্ভকালের অবস্থায় সবচাইতে সতর্কতার জিনিস হলো মেডিসিন। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন অবস্থাতেই কোন মেডিসিন খাওয়া যাবেনা। কোন সমস্যা হলে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে ডাক্তারের দেওয়া নির্ধারিত মেডিসিন টি খেতে হবে। সঠিক খাওয়া - দাওয়ার ফলেও বাচ্চা সুস্থ ভাবে জন্ম গ্রহণ করবে। আর তার ফলে গর্ভকালীন অবস্থায় বাচ্চার মা ও সুস্থ থাকবে।

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়

গর্ভাবস্থায় কোন কোন খাবার গুলো খেলে বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা হয় এ বিষয়গুলোর সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানতে চাই। কিন্তু আমরা সঠিক তথ্য জানতে পারি না। আপনি যদি এই বিষয়ে জানার আগ্রহ থাকে তাহলে চলুন এখন আমরা এই বিষয় সম্পর্কে জেনে নেই। আমরা জেনে নেই কোন কোন খাবারগুলো খেলে গর্ভকালীন অবস্থায় বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা হয়।

দুধ, কলা, সবুজ শাক সবজিঃ গর্ভকালীন অবস্থায় দুধ খেলে বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা হয়। গর্ভকালীন অবস্থার শুরু থেকেই নিয়মিত প্রতিদিন দুধ খেলে দেখবেন বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা হয়। গর্ভকালীন অবস্থা নিয়মিত কলা খেলে বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা হয়। সবুজ শাকসবজি খেলে বাচ্চা গায়ের রং ফর্সা হয়।
আরো পড়ুনঃ 
আম, টাটকা ফলমূলঃ গর্ভকালীন অবস্থায় টাটকা ফলমূল খেলে বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা হয়। পাকা আম খেলে বাচ্চার গায়ে রং ফর্সা হয়। সুতরাং আপনারা যারা বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা নিয়ে চিন্তিত তারা অবশ্যই এই খাবারগুলো বেশি বেশি করে খাবেন।

গর্ভাবস্থায় কি কি সবজি খাওয়া যাবে না

গর্ভাবস্থায় আমরা কোন সবজি বাদ রেখে খাই না। যেইগুলো ভালো সেগুলোও খাই আবার যেইগুলো খারাপ সেইগুলো ও খাই। তাই আমাদের এই বিষয়ের সম্পর্কে জানা উচিত। আশা করছি আপনি আপনার সকলভূল বুঝতে পারবেন। আর আগামিতে সঠিকভাবে চলাফেরা করতে পারবেন।

গর্ভকালীন অবস্থায় কখনোই কোনভাবে কাঁচা পেঁপে খাওয়া যাবেনা। কারণ কাঁচা পেঁপেতে যে এসিড রয়েছে সেটা আপনার গর্ভপাত করে দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই গর্ভকালীন অবস্থায় কখনোই কাঁচা পেঁপে খাওয়া যাবে না। যে সকল সবজিতে এসিডের পরিমাণ বেশি মাত্রায় রয়েছে সেই সকল সবজি পরিহার করতে হবে। গর্ভকালীন অবস্থায় এ নিয়ম কানুনগুলো আমাদেরকে সঠিক ও সুন্দরভাবে জানতে হবে।

গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া যাবে না

গর্ভকালীন অবস্থায় মাছ আবশ্যিক একটি খাবার। মাছ আমাদের আমিষের চাহিদা মেটায় এবং বাচ্চার ওজন বৃদ্ধিতে অনেক ভালো কাজ করে। তবে আমাদেরকে জানতে হবে গর্ভকালীন অবস্থায় কোন কোন মাছ আমরা খেতে পারবো কোনটা পারবো না। গর্ভকালীন অবস্থায় তেলাপিয়া মাছ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
আরো পড়ুনঃ 
তেলাপিয়া মাছে ক্ষতিকর পদার্থ রয়েছে। যার ফলে তেলাপিয়া মাছ খাওয়া যাবে না। গর্ভকালীন অবস্থায় আমাদেরকে সম্পন্ন টাটকা স্যার নেই আজকের ও জীবিত মাছ খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। তাতে করে আমাদের শরীরের কোন ক্ষতি হবে না। বরং সন্তানের আরো উপকার হবে।

গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না

গর্ভাবস্থায় ফল খাওয়া যেমন আমাদের জরুরী। ঠিক তেমনি গর্ভাবস্থায় কোন ফলগুলো খাওয়া যাবেনা সে সম্পর্ক আমাদের জানাও অনেক জরুরী। আর তা হলে উল্ট পাল্টা ফল খাওয়ার কারণে আমাদের অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে। তাই আমাদের এই বিষয়ে জানা অনেক জরুরি। 

গর্ভাবস্থায় আনারস কখনোই খাওয়া যাবে না। আনারসে যে এসিড রয়েছে তা গর্ভ অবস্থায় আপনার ডায়রিয়া হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যার ফলে বাচ্চার মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।গর্ভাবস্থায় কখনো আঙ্গুর ফল খাওয়া যাবেনা। গর্ভ অবস্থায় কখনো পাকা পেঁপে খাওয়া যাবেনা। এ সকল ফলগুলো গর্ভ অবস্থায় আমাদের সম্পন্ন রূপে পরিহার করতে হবে।

গর্ভাবস্থায় টক খেলে কি হয়

গর্ভকালীন অবস্থায় আমাদের অনেকেরই অনেক রকম সমস্যা হয়। কারো খাবারে অরুচি হয়। অনেকে এ সময় টক জাতীয় খাবার টা অনেক পছন্দ করে। অবস্থায় টক খাওয়া যাবে। তবে আমাদেরকে পরিমাণ করে কম করে খেতে হবে।

গর্ভকালীন অবস্থায় একেবারে খাওয়া যাবেনা তা হলো তেতুল। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে টারটারিক অ্যাসিড রয়েছে। যার কারণে বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে। আর তাই আমাদেরকে গর্ভকালীন অবস্থায় কখনোই খুব একটা বেশি পরিমাণে তেঁতুল খাওয়া যাবে না।

গর্ভকালিন অবস্থা নিয়ে সাধারণ জিজ্ঞাসা

প্রশ্নঃ গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসে কি খাবেন?
উত্তরঃ গর্ভাবস্থায় থাকা অবস্থায় প্রথম তিন মাস দুধ, দই, পনীর, বাঁধাকপি, ঢেঁড়স, কাঁটাযুক্ত মাছ, পালং শাক, ডুমুর, ডিম, তিল, তিশি এই সকল খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। আর শরীরের ভিটামিন ডি এর জন্য প্রতিদিন সকালে ৩০ মিনিট ধরে শরীরে সকালের রোদ লাগান।

প্রশ্নঃ গর্ভাবস্থায় কোন সবজি খাওয়া যাবে না?
উত্তরঃ অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্ন সবজি ও আলফালফা, ক্লোভার, কাঁচা পেপে, মূলা এবং মুগ ডাল এড়িয়ে চলতে হবে।

প্রশ্নঃ গর্ভাবস্থায় টক খেতে ইচ্ছা করে কেন?
উত্তরঃ গর্ভাবস্থায় শরীরের সোডিয়াম ও অম্লের চাহিদা অনেক পরিমাণে বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে সেই সময়ে অনেক পরিমাণে টক খেতে ইচ্ছে করে।

প্রশ্নঃ গর্ভাবস্থায় কত লিটার পানি পান করতে হবে?
উত্তরঃ গর্ভাবস্থায় একজন সুস্থ-স্বাভাবিক গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২ থেকে ৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন।

প্রশ্নঃ গর্ভাবস্থার লক্ষণ কতদিন পর প্রকাশ পায়?
উত্তরঃ গর্ভাবস্থার লক্ষণ এক বা দুই সপ্তাহ পরে প্রকাদশ পেতে পারে। এর লক্ষণ হিসেবে রয়েছে বমি বমি ভাব অথবা বমি হওয়া, ঘন ঘন প্রস্রাব, পিরিয়ড মিস হওয়া, স্তনের পরিবর্তন, ক্লান্তি এই সকল লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

শেষ কথা

আজকে আমাদের এই আর্টিকেলের প্রধান আলোচনার বিষয় ছিলো গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া যাবে না সেই সম্পর্কে। আশা করছি আপনি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে উক্ত বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত বুঝতে পেরেছেন। এই রকম তথ্যবহুল আর্টিকেল প্রতিদিন নিয়োমিত পড়ার জন্য আমাদের সাথেই থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url